কিডনি পাথর একটি বেদনাদায়ক সমস্যা, যা দূর করতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি জানতে চান কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার কার্যকরী, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য!
এখানে আমরা আলোচনা করব কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার সবচেয়ে উপকারী, কোনটি এড়িয়ে চলতে হবে এবং কিভাবে প্রাকৃতিকভাবে পাথর গলাতে সাহায্য করে। পানিশূন্যতা, উচ্চ অক্সালেটযুক্ত খাবার এবং লবণাক্ত খাদ্যাভ্যাস কিডনি পাথর তৈরি করতে পারে। তবে সঠিক ডায়েট অনুসরণ করে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
চলুন জেনে নিই কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার আপনার ডায়েটে রাখবেন এবং কিভাবে দ্রুত আরোগ্য লাভ করবেন!
আরও পড়ুন……………
- সাত দিনে মোটা হওয়ার উপায়
- স্থায়ী ফর্সা হওয়ার উপায়
- ১ মাসে চুল ঘন করার উপায়
- দাদ চুলকানি দূর করার ক্রিম
কিডনি পাথর কেন হয়?
কিডনিতে পাথর তৈরি হয় মূলত মূত্রে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ (যেমন ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক অ্যাসিড) জমা হয়ে। ডিহাইড্রেশন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বংশগত কারণ বা কিছু মেডিকেল কন্ডিশনের কারণে পাথর হতে পারে।
কিডনি পাথর গলানোর জন্য কোন খাবার খাবেন?
1. পানি
পর্যাপ্ত পানি পান করা কিডনি পাথর প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। দিনে ৩-৪ লিটার পানি পান করলে মূত্রের ঘনত্ব কমে এবং পাথর জমা হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়।
2. লেবুর রস (লেমন ওয়াটার)
লেবুতে থাকা সাইট্রেট কিডনি পাথর ভাঙতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে ১টি লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
3. তরমুজ
তরমুজে প্রচুর পানি ও পটাসিয়াম থাকে, যা কিডনির পাথর গলাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
4. বেসিল (তুলসী) পাতার রস
বেসিল পাতায় অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে, যা কিডনি পাথর দূর করতে সহায়ক। প্রতিদিন ২-৩টি তুলসী পাতা চিবিয়ে বা জুস করে খেতে পারেন।
5. ডালিমের রস
ডালিমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে, যা কিডনি স্টোন গলাতে সাহায্য করে।
6. অলিভ অয়েল ও লেবুর মিশ্রণ
এক চা চামচ অলিভ অয়েল ও এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে দিনে ২-৩ বার খেলে পাথর গলাতে সাহায্য করে।
7. কলা
কলায় থাকা পটাসিয়াম কিডনিতে পাথর জমা রোধ করে।
8. আপেল সাইডার ভিনেগার
এক গ্লাস পানিতে ১-২ চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করলে পাথর গলাতে সাহায্য করে।
কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?
- অতিরিক্ত লবণ (সোডিয়াম পাথর তৈরি করতে সাহায্য করে)
- অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার (পালং শাক, বাদাম, চকলেট)
- প্রাণীজ প্রোটিন বেশি এমন খাবার (রেড মিট, ডিমের কুসুম)
- ক্যাফেইন ও কার্বোনেটেড ড্রিংকস
কোন খাবার এড়ানো উচিত?
কিডনি পাথর গলাতে সহায়ক খাবারের পাশাপাশি কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত:
- অতিরিক্ত লবণ
- বেশি প্রোটিনজাত খাবার (বিশেষ করে লাল মাংস)
- অক্সালেট-সমৃদ্ধ খাবার (যেমন পালং শাক, চকোলেট, বাদাম)
- সফট ড্রিঙ্কস ও সোডা

পর্যাপ্ত পানি পান করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। বেশি পানি খেলে ইউরিনের মাধ্যমে ক্ষতিকর পদার্থ বেরিয়ে যায় এবং পাথর গঠনের ঝুঁকি কমে।
কি খেলে কিডনির পাথর গলে বেরিয়ে যায়?
কিছু প্রাকৃতিক খাবার রয়েছে যা কিডনি পাথর গলাতে সাহায্য করে:
লেবুর রস: সাইট্রিক অ্যাসিড পাথর গলাতে সাহায্য করে।
তরমুজ: পানির পরিমাণ বেশি থাকায় কিডনি পরিষ্কার করে।
ধনিয়া পানি: কিডনি থেকে টক্সিন বের করে দেয়।
আপেল সাইডার ভিনেগার: কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার হিসেবে এটি খুব কার্যকর।
কি কি খাবার খেলে কিডনি পরিষ্কার হয়?
কিডনি পরিষ্কার রাখতে নিয়মিত কিছু খাবার খাওয়া উচিত:
শসা: প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে।
ডাবের পানি: ইলেক্ট্রোলাইটস সমৃদ্ধ, যা কিডনি সুস্থ রাখে।
পেঁয়াজ ও রসুন: প্রদাহ কমায় এবং কিডনি পরিষ্কার করে।
কিডনিতে পাথর হলে কলা খাওয়া যাবে কি?
হ্যাঁ, কলা পটাসিয়াম সমৃদ্ধ, যা কিডনি পাথর প্রতিরোধে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
কিডনিতে পাথর হলে চা খাওয়া যাবে কি?
গ্রিন টি বা হারবাল টি পান করা যেতে পারে, তবে ব্ল্যাক টি বা অতিরিক্ত চা এড়িয়ে চলুন, কারণ এতে অক্সালেট বেশি থাকে।
কিডনিতে পাথর হলে করণীয় কি?
প্রচুর পানি পান করুন (দিনে ৩-৪ লিটার)।লবণ ও প্রাণীজ প্রোটিন কম খান।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
কিডনিতে পাথর হলে কি খাওয়া যাবে না?
পালং শাক, বীট, চকলেট (অক্সালেট বেশি থাকে)। প্রক্রিয়াজাত খাবার ও কোমল পানীয়। অতিরিক্ত লবণ ও ক্যাফেইন।
কি খেলে কিডনির পাথর বের হবে?
উপরের খাবারের পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ বা প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হতে পারে।
কিডনিতে পাথর হলে কি ওষুধ খেতে হবে?
হ্যাঁ, ডাক্তারের পরামর্শে পাথর গলার ওষুধ (যেমন: Potassium Citrate) নেওয়া যেতে পারে।
কিডনি পাথরের সাইজ ?
৫ মিমি পর্যন্ত পাথর প্রাকৃতিকভাবে বের হতে পারে। এর বেশি হলে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
শেষ কথা
কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার খাওয়া উচিত তা জানলে আপনি প্রাকৃতিকভাবে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। তবে যদি পাথরের আকার বড় হয় বা তীব্র ব্যথা হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন, স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং কিডনি সুস্থ রাখুন!