গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আমাদের জীবনের একটি সাধারণ কিন্তু বিরক্তিকর অংশ হতে পারে। অধিকাংশ মানুষ পেটে অস্বস্তি, গ্যাসের সমস্যা, বা আমাশয় নিয়ে সমস্যায় পড়েন, তবে কখনও কখনও গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা অনুভূত হতে পারে। এই নিবন্ধে, আমরা আলোচনা করবো কিভাবে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা পিঠে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে, এর কারণসমূহ এবং এর সমাধানের উপায়।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার কারণ কি?
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বা অ্যাসিডিটি হলো পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অম্ল উৎপাদনের ফলে সৃষ্ট একটি সাধারণ কিন্তু অস্বস্তিকর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা বদহজম, পেট ফাঁপা, বুক জ্বালাপোড়া এবং পেটে ব্যথার কারণ হয়। এই সমস্যা মূলত অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত মশলাদার বা তেলেভাজা খাবার, ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, চা-কফির অত্যধিক গ্রহণ, মানসিক চাপ এবং দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার কারণে হয়ে থাকে। গ্যাস্ট্রিকের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে পেটে গ্যাস জমা, বমি বমি ভাব, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, খাবার হজম না হওয়া এবং পেটের উপরের অংশে ব্যথা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা, নিয়মিত সময়ে খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি পান, আদা-চা বা ঠাণ্ডা দুধ খাওয়া এবং মানসিক চাপ কমানো জরুরি। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা তীব্র ব্যথা দেখা দেয়।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার লক্ষণ
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যা হলে সাধারণত নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দেয়:
১. পেটে গ্যাস ও ফাঁপাভাব
- পেট ভরে গ্যাস জমে থাকা
- ঘন ঘন ঢেঁকুর ওঠা
- পেট ফুলে যাওয়া বা ভারী লাগা
২. বুক জ্বালাপোড়া (Heartburn)
- গলা ও বুকের মাঝখানে জ্বালাপোড়া অনুভব
- টক বা তেতো স্বাদ আসা
- রাতে শোয়ার পর অস্বস্তি বেড়ে যাওয়া
৩. বদহজম (Indigestion)
- খাবার পর পেটে অস্বস্তি বা ভারীভাব
- অল্প খেলেই পেট ভরে গেছে মনে হওয়া
- খাবার ঠিকমতো হজম না হওয়া
৪. পেটে ব্যথা বা মোচড় দেওয়া
- পেটের ওপরের অংশে (এপিগ্যাস্ট্রিক রিজিয়নে) ব্যথা
- খালি পেটে বা ভরা পেটে ব্যথা বাড়া
- মাঝেমাঝে তীব্র ব্যথা হওয়া
৫. বমি বমি ভাব বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স
- গলা পর্যন্ত অ্যাসিড উঠে আসার অনুভূতি
- মুখে টক টক লাগা
- মাঝেমাঝে বমি হওয়ার প্রবণতা
৬. ক্ষুধামন্দা ও দুর্বলতা
- খাবারে অরুচি
- বারবার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় দুর্বল লাগা
গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা সম্পর্ক
গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা মূলত পেটের এসিড বা গ্যাসের কারণে ঘটে, যা বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। গ্যাস্ট্রিকের
কারণে পিঠে ব্যথা অনুভূত হতে পারে, কিন্তু এটি সরাসরি সম্পর্কিত নয়। পিঠের ব্যথার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
সমস্যার মূল কারণ হলো পেটের সমস্যাগুলি, যেমন:
১. এসিড রিফ্লাক্স: এসিড রিফ্লাক্স বা গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD) যখন পেটের এসিড খাদ্যনালীতে উঠে আসে, তখন এটি পিঠের উপরের অংশে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
২. গ্যাসের চাপ: অতিরিক্ত গ্যাস পেটের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করে, যা পিঠের ওপরেও চাপ ফেলতে পারে। এই চাপ পিঠের পেশী বা স্নায়ুতে ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।
৩. পেটের অগ্নাশয়ের সমস্যা: পেটের অগ্নাশয়ের সমস্যা, যেমন গ্যাস্ট্রাইটিস বা প্যানক্রাটাইটিস, পিঠের ব্যথার কারণ হতে পারে। এই ধরনের ব্যথা সাধারণত পেটের পেছনে অনুভূত হয় এবং এটি পিঠে প্রসারিত হতে পারে।
পিঠে ব্যথার কারণসমূহ
গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা এর বেশ কিছু কারণ হতে পারে:
১. পেটের পেশীতে চাপ: পেটের গ্যাস বা এসিডের কারণে পেটের পেশীতে অতিরিক্ত চাপ পড়লে, তা পিঠের মাংসপেশীতে ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।
২. স্নায়ুর চাপ: গ্যাস বা এসিড পেটের স্নায়ুতে চাপ ফেলতে পারে, যা পিঠে ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।৩. পেটের উল্টো সংকোচন: পেটের গ্যাস বা এসিডের কারণে পেটের সংকোচন পিঠে ব্যথার কারণ হতে পারে।

পিঠে ব্যথা মোকাবেলায় সমাধান
পিঠে ব্যথার সমাধানের জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
১. ডায়েট পরিবর্তন: উচ্চ এসিডযুক্ত খাবার, তেলমসলাযুক্ত খাবার, এবং অতিরিক্ত ক্যাফেইন পরিহার করুন।অধিক ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন এবং জল বেশি পান করুন।
২.আন্তরিক ব্যায়াম: পেটের চাপ কমাতে এবং পিঠের পেশীকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
৩. ভাল অভ্যাস: সঠিকভাবে বসা এবং দাঁড়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। খারাপ পোস্টার পিঠের ব্যথা বৃদ্ধি করতে পারে।
৪. ঔষধ গ্রহণ: যদি ব্যথা অত্যাধিক হয়, তবে পেটের জন্য প্রস্তাবিত ঔষধ গ্রহণ করতে পারেন। তবে এটি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করা উচিত।
৫. চিকিৎসা পরামর্শ: যদি পিঠে ব্যথা স্থায়ী হয়ে যায় বা বেড়ে যায়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। তারা সঠিক পরীক্ষা করে সমস্যার মূল কারণ নির্ধারণ করতে সক্ষম হবেন।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার চিকিৎসা
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
- প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে চিকিৎসা
- সকালে আদা চিবিয়ে খান
- জিরা পানি পান করুন
- কলা বা পেঁপে নিয়মিত খান
- ঠাণ্ডা দুধে মধু মিশিয়ে পান করুন
- ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা
- এন্টাসিড ট্যাবলেট (ডাক্তারের পরামর্শে)
- প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট
- অম্বলের সিরাপ
- দৈনন্দিন অভ্যাস পরিবর্তন
- সময়মতো খাবার খান
- ধূমপান ও অ্যালকোহল বাদ দিন
- রাতের খাবার তাড়াতাড়ি সেরে ফেলুন
- খাবার পর হাঁটাহাঁটি করুন
গ্যাস্ট্রিক প্রতিরোধের উপায়
- মসলাদার খাবার কম খান
- চা-কফির পরিমাণ কমান
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অবহেলা করবেন না। সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতাই পারে আপনাকে সুস্থ রাখতে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা কমাতে ডায়েট পরিবর্তন
সময় | কি খাবেন | কি এড়িয়ে চলবেন |
সকালে ঘুম থেকে উঠে | ১ গ্লাস হালকা গরম পানি + মধু/আদা পানি | চা/কফি, খালি পেটে ফল (সাইট্রাস জাতীয়) |
সকালের নাস্তা | ওটস, মুড়ি, পাতলা সুজি, কলা, পেঁপে | তেলে ভাজা পোড়া, মসলাদার খাবার |
দুপুরের খাবার | ভাত + সবজি + ডাল + মাছ/মুরগি | গরুর মাংস, ঝাল মরিচ, পেঁয়াজু |
বিকালের নাস্তা | বিস্কুট, রুটি, স্যুপ, ডাবের পানি | চা/কফি, চিপস, ফাস্ট ফুড |
রাতের খাবার | হালকা খাবার (রুটি + সবজি/ডাল) | ভারী খাবার, বেশি তেল-মসলা |
ঘুমানোর আগে | ১ গ্লাস গরম দুধ/হলুদ দুধ | অ্যাসিডিক ফল, মিষ্টি |
গ্যাস্ট্রিকের জন্য উপকারী খাবার
- কলা, পেঁপে, নাশপাতি
- ওটস, মুড়ি, সুজি
- সবুজ শাকসবজি
- ডাবের পানি, লেবু পানি
- আদা, মধু, জিরা পানি
গ্যাস্ট্রিকের জন্য ক্ষতিকর খাবার
- তেলে ভাজা পোড়া (সিঙ্গারা, সমুচা)
- ঝাল মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন
- কফি, চা, সফট ড্রিংক
- প্রক্রিয়াজাত খাবার (চিপস, জাঙ্ক ফুড)
- অ্যাসিডিক ফল (লেবু, কমলা, টমেটো)
গ্যাস্ট্রিক নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ডায়েট চার্ট মেনে চলুন। ধীরে ধীরে সমস্যা কমে যাবে!
কিভাবে পেটে গ্যাস প্রতিরোধ করবেন?
গ্যাস প্রতিরোধের ৫টি কার্যকরী টিপস
- ধীরে ধীরে খান:
- খাবার ভালো করে চিবিয়ে খেলে গ্যাস কম হয়।
- দ্রুত খেলে বাতাস পেটে চলে যায়, যা গ্যাসের কারণ হতে পারে।
- গ্যাস তৈরি করে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন:
- বিনস, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি কম খান।
- কার্বোনেটেড ড্রিংকস (কোলা, সোডা) এবং চুইংগাম এড়িয়ে চলুন।
- নিয়মিত হাঁটুন ও ব্যায়াম করুন:
- খাবার পর ১০-১৫ মিনিট হাঁটলে হজম ভালো হয়।
- যোগব্যায়াম (পবনমুক্তাসন) গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন:
- দিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন, তবে খাবারের সময় বেশি পানি খাবেন না।
- গরম পানিতে আদা বা জিরা ফেলে খেলে গ্যাস কমে।
- মানসিক চাপ কম রাখুন:
- স্ট্রেস পেটে গ্যাসের সমস্যা বাড়ায়।
- গভীর শ্বাস নেওয়া বা মেডিটেশন চাপ কমাতে সাহায্য করে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সাধারণ, কিন্তু নিয়ম মেনে চললে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার ঘরোয়া প্রতিকার
দ্রুত গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমাবেন যেভাবে
- আদা-মধুর মিশ্রণ
- ১ চা চামচ আদার রস + ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে খান
- দিনে ২-৩ বার নিতে পারেন
- আদার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমায়
- জিরা পানি
- ১ চা চামচ জিরা ১ গ্লাস পানিতে ফুটিয়ে নিন
- ঠাণ্ডা করে ছেঁকে পান করুন
- খাবারের পর দিনে ২ বার খেলে গ্যাস কমবে
- ঠাণ্ডা দুধ
- ১ গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ অল্প অল্প করে পান করুন
- দুধের ক্যালসিয়াম অ্যাসিড নিউট্রালাইজ করে
দীর্ঘমেয়াদী গ্যাস্ট্রিক নিয়ন্ত্রণ
- কলা-মধু
- পাকা কলার সাথে মধু মিশিয়ে খান
- সকালে নাস্তায় বা বিকেলে খেতে পারেন
- কলা প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে
- তুলসী পাতার রস
- ৫-৬ টা তুলসী পাতা চিবিয়ে খান
- বা গরম পানিতে তুলসী পাতা ফুটিয়ে চা বানিয়ে পান করুন
- তুলসী পেটের অম্লতা কমায়
- ডাবের পানি
- দিনে ১ বার ডাবের পানি পান করুন
- শরীরের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে
গ্যাস্ট্রিকের জ্বালাপোড়া কমাতে
- এলাচ চা
- ২ টা এলাচ গুঁড়ো করে গরম পানিতে মিশিয়ে চা বানান
- দিনে ১-২ বার পান করুন
- পুদিনা পাতার রস
- পুদিনা পাতা বেটে রস করে ১ চা চামচ খান
- বা পুদিনা চা বানিয়ে পান করুন
গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
- খাবার পরপরই শুয়ে পড়বেন না
- একবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান
- রাতের খাবার ঘুমানোর কমপক্ষে ২ ঘণ্টা আগে সেরে ফেলুন
সতর্কতা:
- যদি ৩-৪ দিনেও উন্নতি না হয়
- বমি বা পায়খানার সাথে রক্ত গেলে
- ওজন কমে গেলে অবশ্যই ডাক্তার দেখান
এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো নিয়মিত প্রয়োগ করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। প্রাকৃতিক উপায়ে সুস্থ থাকুন!
আমি কখন একজন ডাক্তারের কাছে যেতে পারি?
- সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পেটে/বুকে ব্যথা থাকলে
- ব্যথা ক্রমাগত বাড়তে থাকলে
- ওজন কমে যাওয়া
- কোনো কারণ ছাড়াই দ্রুত ওজন কমতে থাকলে
- রক্তক্ষরণের লক্ষণ
- কালো বা রক্তযুক্ত পায়খানা
- বমির সাথে রক্ত বা কফির গুঁড়োর মতো পদার্থ
- গিলতে কষ্ট বা শ্বাসকষ্ট
- খাবার গিলতে সমস্যা হলে
- বুকে চাপ লাগা বা শ্বাস নিতে কষ্ট হলে
- অন্যান্য বিপদসংকেত
- বারবার বমি হওয়া
- পেট ফুলে থাকা ও টান টান অনুভব
- ৪০°C এর বেশি জ্বর
কোন ধরনের ডাক্তার দেখাবেন?
- গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট (পাকস্থলী ও অন্ত্রের বিশেষজ্ঞ)
- জরুরী অবস্থায় জেনারেল ফিজিশিয়ান প্রথমে পরামর্শ নিন
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায়
দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর ৭টি কার্যকরী উপায়:
১. জিরা পানি – এক চামচ জিরা গরম পানিতে ফুটিয়ে অল্প অল্প পান করুন (সবচেয়ে দ্রুত কাজ করে)
২. আদা চিবান – ছোট আদার টুকরা চিবালে সাথে সাথে গ্যাস কমবে
৩. গরম পানিতে লেবু – এক গ্লাস গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন
৪. পেট মালিশ – ঘড়ির কাঁটার দিকে পেটে হালকা মালিশ করুন
৫. পায়ের ব্যায়াম – শুয়ে পা ভাঁজ করে পেটে চাপ দিন (পবনমুক্তাসন)
৬. সোডা-লবণ পানি – এক গ্লাস পানিতে অল্প বেকিং সোডা ও লবণ মিশিয়ে পান করুন
৭. তুলসী পাতা – ৫-৬টি কাঁচা তুলসী পাতা চিবিয়ে খান
দ্রুত ফল পেতে:
- উষ্ণ গরম পানি পান করুন
- হাঁটাহাঁটি করুন
- ঢিলা পোশাক পরুন
এই পদ্ধতিগুলো ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই গ্যাস কমিয়ে দেবে!
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা সাধারণত নিচের স্থানগুলোতে হতে পারে:
১. পেটের ওপরের অংশ (এপিগ্যাস্ট্রিক রিজিয়ন):
- বুকের নিচে, পাঁজরের ঠিক নিচে
- খালি পেটে বা ভরা পেটে তীক্ষ্ণ ব্যথা
২. বুকের মাঝখানে:
- হৃদপিণ্ডের কাছে জ্বালাপোড়া (হার্টবার্ন)
- টক ঢেঁকুরের সাথে ব্যথা
৩. পিঠের ওপরের দিকে:
- ব্যথা পিঠ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে
- বিশেষ করে ডান কাঁধের কাছে
৪. গলার নিচের অংশ:
- অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে
- গিলতে কষ্ট হতে পারে
ব্যথার ধরন:
- জ্বালাপোড়া বা চিনচিনে ব্যথা
- মোচড় দিয়ে ব্যথা
- ব্যথা কখনো কখনো হঠাৎ তীব্র হয়
সতর্কতা: যদি ব্যথা…
- বাম দিকে বেশি হয় (হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে)
- পিঠে তীব্র চাপ সৃষ্টি করে
- বমি বা ঘামের সাথে আসে
গুরুত্বপূর্ণ: গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা প্রায়ই হার্ট অ্যাটাকের ব্যথার সাথে গুলিয়ে যায়। তাই তীব্র ও অস্বাভাবিক ব্যথা হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন।
পিঠে ব্যথা মোকাবেলায় সমাধান
পিঠে ব্যথার সমাধানের জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
১. ডায়েট পরিবর্তন: উচ্চ এসিডযুক্ত খাবার, তেলমসলাযুক্ত খাবার, এবং অতিরিক্ত ক্যাফেইন পরিহার করুন।অধিক ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন এবং জল বেশি পান করুন।
২.আন্তরিক ব্যায়াম: পেটের চাপ কমাতে এবং পিঠের পেশীকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
৩. ভাল অভ্যাস: সঠিকভাবে বসা এবং দাঁড়ানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন। খারাপ পোস্টার পিঠের ব্যথা বৃদ্ধি করতে পারে।
৪. ঔষধ গ্রহণ: যদি ব্যথা অত্যাধিক হয়, তবে পেটের জন্য প্রস্তাবিত ঔষধ গ্রহণ করতে পারেন। তবে এটি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করা উচিত।
৫. চিকিৎসা পরামর্শ: যদি পিঠে ব্যথা স্থায়ী হয়ে যায় বা বেড়ে যায়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। তারা সঠিক পরীক্ষা করে সমস্যার মূল কারণ নির্ধারণ করতে সক্ষম হবেন।
শেষ কথা
গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা মধ্যে সম্পর্ক বুঝতে পারলে এই ধরনের সমস্যার সমাধান করা সহজ হতে পারে। যথাযথ খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং চিকিৎসকের পরামর্শ আপনাকে এই সমস্যার মোকাবেলায় সহায়তা করবে। পিঠের ব্যথা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় অথবা বাড়তে থাকে, তবে অবিলম্বে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
আপনি যদি নিয়মিত গ্যাস্ট্রিক সমস্যা অনুভব করেন এবং গ্যাস্ট্রিক থেকে পিঠে ব্যাথা সম্পর্কিত সমস্যা থাকে, তবে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন থাকুন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনি এই ধরনের সমস্যার মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন।
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা পেটের কোথায় হয়?
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা সাধারণত পেটের উপরিভাগে, বিশেষ করে মাঝখানে (এপিগ্যাস্ট্রিক অঞ্চলে) অনুভূত হয়। এটি কখনও কখনও বুকে, পিঠে বা পাশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বুকের কোথায় হয়?
গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুকের মাঝখানে বা উপরের অংশে জ্বালাপোড়া বা চাপ অনুভূত হতে পারে। অনেক সময় এটি হার্টবার্নের মতো মনে হয়, যা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে ঘটে।
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা হলে করণীয় কি?
অল্প অল্প করে বারবার খাবার খান
মশলাযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন
যদি ব্যথা বেশি হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
পিঠে কি গ্যাসের ব্যথা হয়?
হ্যাঁ, গ্যাস্ট্রিকের কারণে অনেক সময় ব্যথা পিঠের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিশেষ করে বেশি গ্যাস জমে গেলে বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স হলে এই ধরনের ব্যথা অনুভূত হতে পারে।